প্রকৃতির নিয়মে সন্ধ্যা আসে। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে প্রেমিক যুগল মেতে ওঠে আড্ডা আর আনন্দ গানে। তবে এখনও কি কারো মনে পড়ে সত্তর দশকের সেই জনপ্রিয় গানের কথা?
কালের খেয়ায় দিন গড়িয়ে পেরিয়ে গেছে প্রায় ৫০ বছর। তবে এখনও শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় সত্তর দশকের ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা, শুধু দুজনায়’গানটি।
সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তন এসেছে সমাজ ও সংস্কৃতিতে। পরিবর্তন এসেছে চিন্তা ও ভাবনাতেও। তারপরও গানটি এ সময়ে প্রাসঙ্গিক। আজও গানটি ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে কৈশোরে কিংবা তারও আগের শৈশবে।
কালজয়ী এ গানের স্রষ্টা গীতিকার এস এম হেদায়েত ও সুরকার লাকী আখন্দ। এ গানটি পরিচিত হলেও গান সৃষ্টির পেছনের গল্প অনেকের কাছেই অজানা।
গানটি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল জানেন? একবার নওগাঁর জমিদার বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন দুই বন্ধু হেদায়েত ও লাকী। গ্রামীণ অপরূপ দৃশ্য দেখে লাকীকে তার বন্ধু হেদায়েত ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা শুধু দুজনে’-গানের দুটো লাইন শোনান।
শুরুতে লাকী তেমন পাত্তা দেননি। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর ‘চলো না ঘুরে আসি অজানাতে, যেখানে নদী এসে থেমে গেছে’ লাইন দুটো শোনার পর লাকীর মনে ধরে যায় শব্দগুলো। তাই সেদিনই গানটি লিখে ফেলেন এস এম হেদায়েত।
ঢাকায় ফিরেই রক অ্যান্ড রোল এর উপর গানটির সুর ও সংগীত করেন লাকী। ‘শূন্যতাই জানো শুধু, শূন্যতার ভেতরে যে ঢেউ থাকে, সে কথা জানো না?’ শঙ্খ ঘোষের কবিতার মতোই গানের সুরের অন্বেষণে লাকী শূন্যতার বুকে ঢেউয়ের সন্ধান করে গেছেন। গানটি সুর করার পর। তাতে কন্ঠ দেন তার ভাই হ্যাপী আখন্দ।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে প্রথম গানটি রেকর্ড করে আলোচনায় আসেন লাকী। এ গান পরবর্তীতে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকিরের ‘ঘুড্ডি’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয়। সিনেমায় গানের দৃশ্যায়নে সমুদ্রের পাড়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ ও সুবর্ণা মোস্তফার অসাধারণ কাব্যিক আবহ যেন গানটিকে নিয়ে যায় অন্য মাত্রায়। এরপরের ইতিহাস সবারই জানা। বাংলা ব্যান্ড ও পপ সঙ্গীতের সর্বকালের সেরা জনপ্রিয় গানগুলোর তালিকায় স্থান পায় এ গানটি।