কিংবদন্তি গায়ক ও গীতিকার ডেভিড বোওয়ি। তাঁর প্রায় প্রতিটি গানের পেছনেই আছে গল্প। প্রতিটি গানের পেছনে একটি প্রেরণা ও গল্প থাকে। কেন বিখ্যাত হয় গানটি কিংবা কীভাবে লেখা হলো সেটি! সদ্য প্রয়াত খ্যাতিমান ব্রিটিশ গায়ক ও গীতিকার ডেভিড বোওয়ির সে রকম ১০টি বিখ্যাত গানের পেছনের গল্প নিয়ে এই আয়োজন।
১. স্পেস অডিটি: এটি ডেভিড বোওয়ির প্রথম হিট হওয়া গান। অ্যাপোলো ১১-এর চাঁদে অবতরণ উদ্যাপনে বিবিসি ‘স্পেস অডিটি’ গানটি বাজায়। এতে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে গানটি। এমনকি আমেরিকার চন্দ্র বিজয়ের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে যায় ‘স্পেস অডিটি’।
২. ফেম: জন লেননের সঙ্গে যৌথভাবে গানটি লিখেছেন বোওয়ি।
৩. জাম্প দে সে: ১৯৮৫ সালে সৎভাই টেরির মৃত্যুতে ভীষণভাবে মুষড়ে পড়েন বোওয়ি। সেই শোক থেকেই তিনি করেন ‘জাম্প দে সে’ গানটি।
৪. মডার্ন লাভ: ডেভিড বোওয়ির দাবি, গায়ক ও গীতিকার লিটল রিচার্ডের প্রেরণায় তিনি গানটি লিখেছেন। তবে এলটন জনের ‘আই অ্যাম স্টিল স্ট্যান্ডিং’ গানটির সঙ্গেও মিল আছে গানটির। অথচ এই দুই শিল্পীরই দাবি, গান দুটি একই সময়ে রেকর্ডিং করা হলেও কেউ কারও গান সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেননি।
৫. স্টারম্যান: রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোওয়ি বলেছিলেন, জিগ্গি স্টারডাস্ট আসলে কোনো আসমানি কেউ নয়। বরং সে ঈশ্বরের একজন দূত মাত্র। এই গান নিয়ে আরও নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রয়েছে। তবে গানের মোদ্দাকথা, এতে খ্রিষ্টের প্রত্যাবর্তনের কাহিনিই লুকিয়ে আছে।
৬. লাইফ অন মার্স: একটি ফরাসি ভাষার গান হিসেবে তৈরি হয় ‘লাইফ অন মার্স’। ফলে ইংরেজি সংস্করণ নিয়ে মাথা ঘামাননি বোওয়ি। উল্টো স্বত্ব বিক্রি করে পল আংকা নামে এক সংগীত পরিচালকের কাছে। পল সেটা নিয়ে লিখে ফেলেন ‘মাই ওয়ে’ গানটি, যেটা ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা গেয়ে বিখ্যাত বানিয়ে ফেলেন। পরে হুঁশ ফেরে বোওয়ির। ‘মাই ওয়ে’র প্যারোডি হিসেবে লিখে ফেলেন এই গান।
৭. রেবেল রেবেল: রাতে ঘুম আসছিল না। কিন্তু সকালে টিভির একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে বোওয়িকে। হঠাৎ শুনলেন ওপরতলা থেকে গিটারের একটা অদ্ভুত শব্দ আসছে। যেন বলছে, ‘রেবেল রেবেল’। ওপরে গিয়ে তিনি দেখেন জন ম্যাকেনরো বাজাচ্ছেন। নিচতলায় শুয়ে শোনা গিটারের সুরের ওই অপভ্রংশ থেকেই ‘রেবেল রেবেল’ গানটা।
৮. হিরোস: বার্লিন দেয়ালের পাশে প্রেম করছিল কয়েকটি জুটি। তাদের মধ্যে ছিলেন শিল্পী টনি ভিসকন্টি ও তাঁর জার্মান প্রেমিকাও। তাদের প্রেম নিয়েই লেখা এই গান।
৯. লেটস ড্যান্স: খ্যাতিমান গিটারিস্ট স্টিভ রে ভন এই গানের শেষের দিকে গিটার বাজিয়েছেন। এটি বোওয়ির সব থেকে বেশি বিক্রি হওয়া অ্যালবামের একটি গান। এমনকি যুক্তরাজ্যে প্রকাশের প্রথম সপ্তাহে রেকর্ড করে সেটি উঠে আসে বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশের বিক্রি শীর্ষ গানের তালিকায়। এই অ্যালবামের মাধ্যমে নতুন একঝাঁক তরুণ শ্রোতার কাছে পৌঁছান বোওয়ি।
১০. আন্ডার প্রেসার: সুইজারল্যান্ডের এক স্টুডিওতে কুইন ব্যান্ড তাঁদের অ্যালবামের রেকর্ডিং করছিল। একই সময়ে রেকর্ডিংয়ের সময় বরাদ্দ পান বোওয়ি। তাদের একসঙ্গে পেয়ে অনুরোধ করা হয়, যেন সিনেমার একটি গান তাঁরা বাজান। বেশ খানিকক্ষণ নিজেরা বাজানোর পর বোওয়ি বলেন, ‘অন্যের জন্য কেন, এসো নিজেরাই একটা গান করে ফেলি।’ তাঁরা যৌথভাবে করেন ‘আন্ডার প্রেসার’ গানটি।
রাসেল মাহমুদ
ওপেন কালচার, উইকি, পারফরমিং সংরাইটার্স, বায়োগ্রাফি অবলম্বনে